Ticker

10/recent/ticker-posts/

পরিপূর্ণ সূরা বাকারার পাঠ কারির উপকারিতা

পরিপূর্ণ সূরা বাকারার পাঠ কারির উপকারিতা


১। এ সূরা পাঠ করা বরকত আর পাঠ না করা হলো পরিতাপ:

আবু উমামা আলবাহেলী রাদিআল্লাহ তাঁর বর্ণনায় বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম, কে বলতে শুনেছি: তিনি তার বর্ণনায় বলেন: তোমরা সূরা বাকারাকে পাঠ করো, কেননা এ সূরা পাঠ করা হলো বরকত আর পাঠ না করা হলো পরিতাপের কারণ। এ সূরা যে পাঠ করে তাকে কোন প্রকার যাদু আক্রমণ করতে পারে না।


👉দেখুন: সহীহ মুসলিম, মুসাফির ও তার নামায আদায়ের বিধান, কুরআন পাঠ করা ও বিশেষ করে সূরা বাকরাহ পাঠ করার ফযিলত অধ্যায়, ২৫২- (৮০৪), ১/৫৫৩ নং হাদীসের অংশ বিশেষ।


👉যে বাড়ীতে এ সূরা পাঠ করা হয় সে বাড়ীতে শয়তান প্রবেশ করতে পারবে না:

আবু হুরাইরা রাদিআল্লা হতে বর্ণিত, তিনি তার বর্ণনায় বলেন, নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, এরশাদ করেন, তোমাদের ঘর-বাড়ীকে করবে পরিণত করো না । নিশ্চয়ই যে বাড়ীতে সূরা বাকারা পাঠ করা হয় সে বাড়ীতে শয়তান প্রবেশ করে না।


👉জামে তিরমিজী, রাসূল্লাহ হতে বর্ণিত কুরআনের ফযিলত, সূরা বাকারা ও আয়াতুল কুরসী সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে সে সম্পর্কিত অধ্যায়, হাদীস নং ৩০৩৭, ৮/৮৩৬। এই হাদীস সম্পর্কে ইমাম তিরমিজী বলেন: হাদীসটি হাসান সহীহ,(দেখুন উল্লেখিত টীকা,৮/১৩৬) শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। সহীহ সুনানে তিরমিজী ৩৪।


👉যে বাড়ীতে সূরা বাকারা পাঠ করা হয়, তা শুনে, শয়তান সে বাড়ী থেকে পালায়ন করে:

আবু হুরাইরা হতে বর্ণিত তিনি তার বর্ণনায় বলেন, রাসূলুল্লাহ আলাইহে ওয়াসাল্লাম, এরশাদ করেন: তোমাদের ঘর বাড়ীকে কবরে পরিণত করে। না। নিশ্চয় শয়তান ঐ বাড়ী থেকে পলায়ন করে যে বাড়ীতেসূরা বাকারা পাঠ করা হয়।


👉সহী মুসলিম মুসাফির ও তার নামাজের বিধান অধ্যায় বাড়ীতে নব নামাজ আদায় করা উত্তম তবে মসজিদে পড়াও জায়েজ অধ্যায় ২১২-(৭৮০) ১/৫৩৯।


২। এই আয়াত পাঠকারী শয়তান হতে নিরাপদ:

নিম্নে তার কতিপয় দলীল:

👉আবু হুরাইরা রাদিআল্লা হতে বর্ণিত, তিনি তার বর্ণনায় বলেন, রাসূলুল্লাহ আমাকে রামজান মাসে জাকাতের মালের প্রহরী নিযুক্ত করেন, প্রহরায় থাকার সময় এক ব্যক্তি এসে হাত দ্বারা খাদ্য নেওয়া শুরু করে, আমি তাকে ধরে বললাম: আমি তোমাকে রাসূলুল্লাহ এর নিকটে নিয়ে যাব, তার পূর্ণ ঘটনার পর।


👉(হাদীসটি বর্ণনা করল) পূর্ণ হাদীসটি বুখারীতে দেখুন, ওকালা অধ্যায়, যদি কোন ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির উপর কোন কিছু ন্যস্ত করে, আর ন্যস্তকৃত ব্যক্তি কোন কিছু ছেড়ে দিল, আর ন্যস্তকারী ব্যক্তি তা অনুমতি দান করল, তা বৈধ সম্পর্কিত পরিচ্ছেদ। হাদীস নং ২৩১১, ৪/৪৮৭।


অতপর সে বলে: তুমি যখন ঘুমানোর জন্য বিছানায় যাবে, তখন আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে, তবে সারা রাত আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন প্রহরী থাকবে, সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার নিকটবর্তী হতে পারবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লালহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, এ ঘটনার বর্ণনা শুনার পর তিনি বলেন: সে সত্যই বলেছে, তবে সে মিথ্যাবাদী, সে ছিল শয়তান। (বুখারী)


👉দেখুন, উল্লেখিত টীকা, সৃষ্টির সূচনা অধ্যায়, ইবলীস ও তার দলের বর্ণনা সম্পর্কিত পরিচ্ছেদ, হাদীস নং ২৩৭৫, ৬/৩৩৫-৩৩৬।


👉উবায় বিন কাব এ হতে বর্ণিত, তিনি যখন শয়তানকে পাকড়াও করলেন, তখন তাকে বল্লেন: তোমাদের অনিষ্ট হতে বাঁচার উপায় কি?


সে বলল: সুরা বাকারা হতে আয়াতুল কুরসী ‘‘আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহু…..’’ পাঠ করবে? তিনি উত্তর দেন, হাঁ।


👉সে বললঃ আপনি যদি সকালে পাঠ করেন, তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাদের থেকে নিরাপদে থাকবেন? আর সন্ধ্যায় পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত নিরাপদে থাকবেন।

উবায় রাদিআল্লাহ বলেনঃ আমি সকাল বেলা রাসূলুল্লাহু সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, এর নিকট গিয়ে বিস্তারিত জানালে তিনি বলেনঃ দুষ্টু-অনিষ্টকারী সত্যই বলেছে।


👉কিতাব সুনানে কুবরা, তৃতীয় খণ্ড, দিবা-রাত্রির আমল অধ্যায় হতে সংগৃহীত, জিন ও শয়তান হতে কিভাবে নিরাপদে থাকা যায় সে আলোচনা, হাদীস নং ১০৭৯৭/২, ৬/২৩৮। আরো দেখুন: আল ইহসান ফি তাকরীবে সহী ইবনে হিব্বান, কিতাবুর রাকায়েক, কুরআন পাঠের অধ্যায়, আয়াতুল কুরসী করে শয়তান হতে নিরাপদ থাকার অধ্যায় । আল্লাহ তায়ালা তাদের অনিষ্ট হা আমাদেরকে রক্ষা করুন। - হাদীস নং ৭৮৪, ৩/৬৩-৬৪। আরো দেখুনঃ মুসতাদরাক আলাস সহীহাইন, কুরআনে ফযিলতের অধ্যায়, ১/৫৬২; আর হাদীসের মূল বাক্যগুলি তার। আরো দেখুনঃ মাজমাউয আযযায়েদাহ, জিকির অধ্যায়, সকাল ও সন্ধ্যায় কি পাঠ করতে হয় সে সম্পর্কিত পরিচ্ছেদ, ১০/১১৭-১১৮।


ইমাম হাকেম এ হাদীসের সনদকে সহীহ বলেছেন এবং হাফেয যাহাবী সম করেছেন। (দেখুনঃ মুসতাদরাক ১/৫৬২; এবং তালখীস ১/৫৬২)। হাফেয হায়সামী এ সম্পর্কে বলেনঃ এ হাদীসটি তাবারানী বর্ণনা করেছেন, বর্ণনাকারী সবাই শুদ্ধ। (মুজাম্মাহ আযযায়েদাহ ১০/১১৮); এ হাদীস সম্পর্কে। শায়খ আরনাউত বলেন সনদ খুবই শক্তিশালি।(দেখুন; আল এহসান ফি তাকরীব সহীহ ইবনে হি্ব্বান এর টীকা দ্রষ্টব্য ৩/৬৪)।


👉আবু আইয়ূব আল-আনাসরী রাদিআল্লাহ হতে বর্ণিত- সুদীর্ঘ হাদীস-তাতে রয়েছেঃ আবু আইয়ূব রাদিআল্লা যখন তৃতীয় বারের মত শয়তান চোরকে ধরে বললেনঃ আজ তোমাকে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম এর নিকট নিয়ে না গিয়ে কোন ক্রমেই ছাড়ব না।


👉সে বললঃ আমি তোমার জন্য এমন কিছু স্মরণ রেখেছি, আর তা হলো আয়াতুল কুরসী, তুমি প্রত্যেহ বাড়ীতে পাঠ করবে, তবে তোমার বাড়ীতে শয়তান ও অন্যান্য কেউ নিকটবর্তী হতে পারবে না।

তিনি রাসূলুল্লাহ ছাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম, এর নিকট আসার পর।

তিনি বলেনঃ তোমার বন্দির খবর কি?

তিনি বলেনঃ সে কি বলেছে, সে সম্পর্কে আমি তাঁকে বিস্তারিত জানালাম।

তিনি বল্লেনঃ সে সত্যই বলেছে, তবে সে মিথ্যাবাদী।


👉মুসনাদ, হাদীস নং ২৩৫৯২, ৩৮/৫৬৩; এবং জামে তিরমিজী, কুরআনের ফযিলত অধ্যায়, সূরা বাকারা ও আয়াতুল কুরসীর বর্ণনা সম্পর্কিত পরিচ্ছেদ, হাদীস নং ৩০৪০, ৮/১৪৮-১৫০, তারগীব ও তারহীব ২/৩৭৪); শায়খ আলবানী সহীহ বলেছেন।(দেখুন: সহীহ সুনানে তিরমিজী ৩/৪।)


উল্লেখিত হাদীস হতে যা বুঝা গেলঃ

👉যে ব্যক্তি ঘুমের সময় আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে, তার জন্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে একজন রক্ষাকারী থাকবে আর সকাল হওয়া অবধি শয়তান তার নিকটবর্তী হতে পারবে না।


👉এই আয়াত পাঠকরী সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত ও সন্ধ্যা হতে সকাল পর্যন্ত শয়তান হতে নিরাপদে থাকবে।

👉এই আয়াত বাড়ীতে পাঠ করলে শয়তান ও মানুষের অনিষ্টকারী সর্ব কিছু দূর হয়।


৩। ফরজ নামায ও অন্যান্য নামাযান্তে পাঠকারীর জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে হিফাযত রয়েছে:


হাসান বিন আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ ছাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম, এরশাদ করেনঃ যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয নামাযান্তে আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে, সে অন্য নামায আসার আগ পর্যন্ত আল্লাহর জিম্মায় থাকবে । (তাবারাণী)


👉তারগীব ও তারহীব হতে সংগৃহীত, জিকির ও দোয়া অধ্যায়, ফরজ নামাযান্তে আয়াত ও জিকির পাঠ করার প্রতি উৎসাহ প্রদান অধ্যায়, হাদীস নং ৭, ২/৪৫৩। হাফেয মুনজিরি ও হাফেয হায়সামী এ হাদীসে সনদকে হাসান বলেছেন।

(দেখুন: উল্লেখিত টাকা, ২/৪৫৩; এবং মাজমুয যাওয়েয়েদ ১০/১০৯)।


৪। প্রত্যেক ফরয নামাযান্তে এ আয়াত পাঠকারীর জান্নাতে প্রবেশের বাধা শুধু মাত্র মৃত্যু:


আবু উমামা রাদিআল্লাহ হতে বর্ণিত, তিনি তার বর্ণনায় বলেন: রাসূলুল্লাহ সালল্লাহ এরশাদ করেন: যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয নামাযান্তে আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে, জান্নাতে প্রবেশে তার মৃত্যুই শুধু বাধা। (ইমাম নাসায়ী, ইবনে হিব্বান ও (তাবারাণী।)


👉কিতাবুস সুনানুল কুবরা, দিবা-রাত্রির আমল অধ্যায়, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয নামাযান্তে আয়াতুল কুরসী পাঠ করে তার সওয়াব সম্পর্কিত পরিচ্ছেদ, হাদীস নং ৯৯২৮/১, ৬/৩০; এবং তারগীব ও তারহীব, জিকির ও দোয়া অধ্যায়, প্রত্যেক ফরয নামাযান্তে আয়াত ও জিকির পাঠ করার প্রতি উৎসাহ প্রদান পরিচ্ছেদ, হাদীস নং ৬, ২/৪৫৩, এবং মাজমাউয যাওয়ায়েদ, জিকিরের অধ্যায়, নামযান্তে জিকির করার বিধান পরিচ্ছেদ, ১০/১০২। হাফেয ইবনে হাজার হাদীসটিকে হাসান ও শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।


👉(দেখুন: নাতায়েজুল আফকার ২/২০৩, সহীহ হাদীস সিরিজ ২/৬৯৭-৬৯৮)।


আমাদের এই ইউটুব চ্যেনেলে কুরআন সুন্নাত হাদীস,দৌনন্দিন জিকিরের ফজিলত বিষয়ে জানার জন্য চ্যনেলে {হে মুমিনগণ!}দেখুন।

সুনানে ইবনে মাজহা সহি হাদিস শুনুর জন্য ইউটুব চ্যনেস {হাদিস বিশ্বনবির বাণী}দেখুন।

সুনানে ইবনে মাজহা সবগো সহিহ হাদিস দেখুন।

আল-কোরআন ১১৪টি সুরা শুনার জন্য ইউটুব চ্যেনেল {ইসলামিক একাডেমি এনপি}দেখুন।



Post a Comment

0 Comments