অনেক সময় আমরা এ সমস্যায় পড়ে যাই। ঠিক করতে পারি না রোগটা মানসিক না-কি পাগল, না কি জ্বীনের আছর থেকে রোগ দেখা দিয়েছে। অনেক সময় তা আমরা মানসিক-রোগীকে জ্বীনে-ধরা রোগী বলে থাকি । তেমনি জ্বীনে-ধরা রোগীকে মানসিক রোগী বলে চালাতে চেষ্টা করি। বিশেষ করে ডাক্তার ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা কোনভাবেই জ্বীনের আছরকে স্বীকার করতে চান না। তারা এ জাতীয় সকল রোগীকে মানসিক রোগী বলে সনাক্ত করে থাকেন।
পাগলামীকে আরবীতে বলা হয় জুনুন। আর পাগল-কে বলা হয় মাজনূন । আরবীতে এ জুনুন ও মাজনূন শব্দ দুটি কিন্তু জ্বীন শব্দ থেকে এসেছে।
যেমন আল কুরআনে এসেছে -
إِنْ هُوَ إِلَّا رَجُلٌ بِهِ جِنَّةٌ فَتَرَبَّصُوا بِهِ حَتَّى حِيْنِ .
সে কেবল এমন এক লোক, যার মধ্যে পাগলামী রয়েছে। অতএব তোমরা তার সম্পর্কে কিছুকাল অপেক্ষা কর ।
এ কথাটি নূহ আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ের লোকেরা তার সম্পর্কে বলেছিল ।
এ আয়াতে জ্বীন্নাতুন শব্দের অর্থ হল পাগলামী।
কাজেই কাউকে পাগলামীর মতো অস্বাভাবিক আচরণ করতে দেখলে সেটা যেমন জ্বীনের আছরের কারণে হতে পারে, আবার তা মানসিক রোগের কারণেও হতে পারে। তবে এ বিষয়ের বিশেষজ্ঞরা অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু বিষয় নির্ধারণ করেছেন, যার মাধ্যমে মানসিক রোগী জ্বীনে-ধরা রোগীর মধ্যে পার্থক্য করা যায়।
এগুলো হলো-
১. জ্বীনে-ধরা রোগী কিছুক্ষণের জন্য বেঁহুশ হয়ে যায়। মানসিক রোগী বেঁহুশ হয়ে পড়ে না ।
২. কখনো কখনো জ্বীনে-ধরা রোগীর মুখ থেকে ফেনা বের হয়। দাতে খিল লেগে যায় । মানসিক রোগীর মুখ থেকে ফেনা বের হয় না ।
৩. জ্বীনে ধরা রোগী প্রায়ই স্বপ্নে সাপ, কুকুর, বিষ্ণু, বানর, শিয়াল, ইঁদুর ইত্যাদি দেখে থাকে । কখনো কখনো স্বপ্নে দেখে সে অনেক উঁচু স্থান থেকে পড়ে যাচ্ছে ।
৪. জ্বীনে ধরা রোগীর সর্বদা ভীতু ভীতু ভাব থাকে ।সর্বদা তার ভয় লাগে। মানসিক রোগীর তেমন ভয় থাকে না ।
৫. জ্বীনে ধরা রোগী নামায পড়া, কুরআন তেলাওয়াত, আল্লাহর যিকির ইত্যাদি পছন্দ করে না । বরং এগুলো তার অস্থিরতা বাড়িয়ে দেয় ।
৬. জ্বীনে ধরা রোগী কখনো কখনো ভিন্ন ভাষা ও ভিন্ন ভঙ্গিতে কথা বলে ।
৭. জ্বীনে ধরা রোগী অধিকাংশ সময় স্বাভাবিক থাকে । মাঝে মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ করে।
৮. জ্বীনে-ধরা রোগী থেকে অনেক সময় আশ্চর্যজনক বিষয় প্রকাশ হয়ে থাকে । যেমন অল্প সময়ে সে বহু দূরে চলে যায়। গাছে উঠে সরু ডালে বসে থাকে ইত্যাদি।
৯. জ্বীনে ধরা রোগীর কাছে স্বামী, ঘর-সংসার, স্ত্রী-সন্তানদের ভালো লাগে না ।
১০. জ্বীনে ধরা রোগীর উপর যখন জ্বীন চড়াও হয় তখন ক্যামেরা দিয়ে তার তো ছবি তুললে ছবি ধোঁয়ার মতো অস্পষ্ট হয়। স্পষ্ট হয় না, দেখা গেছে আশে পাশে সকলের ছবি স্পষ্টভাবে উঠেছে কিন্তু রোগীর ছবিটি ধোয়াচ্ছন্ন । এটা কারো কারো নিজস্ব অভিজ্ঞতা। মনে রাখতে হবে অভিজ্ঞতা সর্বদা এ রকম ফলাফল নাও দিতে পারে ।
কিন্তু বড় সমস্যা হবে তখন, যখন রোগীটি নিজেকে জ্বীনে ধরা বলে অভিনয় করে কিন্তু তাকে জ্বীনেও আছর করেনি আর সে মানসিক রোগীও নয় । সে তার নিজস্ব একটি লক্ষ্য পূরণের জন্য জ্বীনে ধরার অভিনয় করছে। এ অবস্থায় অভিভাবকের করণীয় হলো, তারা তাকে তার দাবি পূরণের আশ্বাস দেবে। তাহলে তার জ্বীন ছেড়ে যাবে। পরে তার দাবিটি যৌক্তিক হলে পূরণ করা হবে আর অযৌক্তিক হলে পূরণ করা হবে না। এরপর যদি সে আবার জ্বীনে ধরার অভিনয় করে, তাহলে তকে জ্বীনে ধরা রোগী বলে আর বিশ্বাস করার দরকার নেই। অনেক সময় শারীরিক শাস্তির ভয় দেখালে এ ধরনের বাতিল জ্বীন চলে যায় ।
৭. যে সব কারণে জ্বীন চড়াও হয়
কিছু বিষয় রয়েছে যার উপস্থিতির কারণে মানুষকে জ্বীনে আছর করে থাকে ।
১. প্রেম । কোন পুরুষ জ্বীন কোন নারীর প্রেমে পড়ে যায়, অথবা কোন নারী জ্বীন যদি কোন পুরুষের প্রেমে পড়ে তাহলে জ্বীন তার ঐ প্রিয় মানুষটির উপর আছর করে ।
২. কোন মানুষ যদি কোন জ্বীনের প্রতি জুলুম-অত্যাচার করে বা কষ্ট দেয় তাহলে জ্বীনটি সেই মানুষের উপর চড়াও হয়। যেমন জ্বীনের গায়ে আঘাত করলে, তার গায়ে গরম পানি নিক্ষেপ করলে, কিংবা তার খাদ্য-খাবার নষ্ট করে দিলে জ্বীন সেই মানুষের উপর চড়াও হয় ৷
৩. জ্বীন খামোখা জুলুম-অত্যাচার করার জন্য মানুষের উপর চড়াও হয়। তবেএটি পাঁচটি কারণে হতে পারে :
ক. অতিরিক্ত রাগ,
খ. অতিরিক্ত ভয়,
গ. যৌন চাহিদা লোপ পাওয়া,
ঘ. মাত্রাতিরিক্ত উদাসীনতাও।
ঙ. নোংড়া এবং অপবিত্র থাকা ।
কারো মধ্যে এ স্বভাবগুলো থাকলে জ্বীন তাকে আছর করে অভ্যাচার করার সুযোগ পেয়ে যায় ।
আমাদের এই ইউটুব চ্যেনেলে কুরআন সুন্নাত হাদীস,দৌনন্দিন জিকিরের ফজিলত বিষয়ে জানার জন্য চ্যনেলে {হে মুমিনগণ!}দেখুন।
সুনানে ইবনে মাজহা সহি হাদিস শুনুর জন্য ইউটুব চ্যনেস {হাদিস বিশ্বনবির বাণী}দেখুন।
সুনানে ইবনে মাজহা সবগো সহিহ হাদিস দেখুন।
আল-কোরআন ১১৪টি সুরা শুনার জন্য ইউটুব চ্যেনেল {ইসলামিক একাডেমি এনপি}দেখুন।
সুনানে ইবনে মাজহা সহি হাদিস শুনুর জন্য ইউটুব চ্যনেস {হাদিস বিশ্বনবির বাণী}দেখুন।
সুনানে ইবনে মাজহা সবগো সহিহ হাদিস দেখুন।
আল-কোরআন ১১৪টি সুরা শুনার জন্য ইউটুব চ্যেনেল {ইসলামিক একাডেমি এনপি}দেখুন।
0 Comments