Ticker

10/recent/ticker-posts/

সূরা ফালাক, নাস ও এখলাস পাঠের উপকারিতা

সকাল-সন্ধ্যা সূরাগুলি পাঠ করলে সকল কিছুর জন্য যথেষ্ট হবে:

মুআজ বিন আব্দুল্লাহ বিন খুবাইব তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, 

তিনি তার বর্ণনায় বলেন: এক বৃষ্টিময় অন্ধকার রাতে বের হয়ে আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এর অপেক্ষায় ছিলাম যে, তিনি আমাদের নামায পড়াবেন। 

বর্ণনাকারী বলেন: অতপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদের নামায পড়ানোর উদ্দেশ্যে বের হলেন।


অতপর আমাকে বললেন: ‘পাঠ কর’ আমি কিছুই বললাম না, অত:পর তিনি বলেন: ‘বল’ আমি বললাম: কি বলব? তিনি বললেন: সকালে ও সন্ধ্যায় সূরা এখলাস, সূরা ফালাক ও নাস তিনবার করে পাঠ করবে, তবে তোমার সকল কিছুর জন্য যথেষ্ট হবে। 


(আবু দাউদ, তিরমিজী ও নাসায়ী) সুনানে আবু দাউদ, আদব অধ্যায়, সকালে কি পাঠ করতে হবে তার পরিচ্ছেদ, হাদীস নং ৫০৭২, ১৩/২৯০; এবং জামে তিরমিজী, দাওয়াত অধ্যায়ে এ সম্পর্কে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে । হাদীস নং ৩৮১০; ১০/২১; হাদীসের মূল শব্দগুলি তার ।


সুনানে নাসায়ী, নিরাপদের উপায় অধ্যায়, ৮/১২৫০। ইবনে হাজার ও শায়খ আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন । (দেখুন: নাতায়েজুল আফকার ২/২৩৮ । 

আরো দেখুন: সহীহ সুনানে আবু দাউদ ৩/৯৫৮; ও সহীহ সুনানে তিরমিজী ৩/১৮২; ও সহীহ সুনানে নাসায়ী ৩/১১০৪।


রাসূলুল্লাহ এর বাণী: তোমার সকল কিছুর জন্য যথেষ্ট হবে”: এর অর্থ হলো: সকল প্রকার অনিষ্ট তোমার হতে প্রতিহত করা হবে। অথবা যত দোয়া দ্বারা আশ্রয় চাওয়া হয়, (সেগুলি পাঠ না করে ও) এগুলি পাঠ করাই তোমাদের জন্য যথেষ্ট হবে। দেখুন: শরহে আত তায়বী, ৫/১৬৭১; ও আওনুল মাবুদ ১৩/২৯০।


সূরা ফালাক ও নাস পাঠের উপকারীতা:

এ সূরাদ্বয়ের মত অন্য কোন সূরা দিয়ে এত বেশী প্রার্থনা ও আশ্রয় চাওয়া হয় না:

উকবা বিন আমের এ হতে বর্ণিত, তিনি তার বর্ণনায় বলেন:

আমি রাসূলুল্লাহ এর সাথে চলছিলাম। 


অতঃপর তিনি বল্লেন: হে উকবা! তুমি বল:

আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি বলব? 

তিনি আমাকে কিছু না বলে চুপ থেকে পূণরায় বল্লেন: হে উকবা! বল: 

আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি বলব?

তিনি আমাকে কিছু না বলে কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন। 

আমি বললাম: হে আল্লাহ! তুমি আমার দিকে তার মনোনিবেশ করে দাও ।

অতপর তিনি বল্লেন: হে উকবা! তুমি বল:

আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি বলব? 

তিনি বল্লেন: তুমি সূরা “কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক” পাঠ করো, আমি যখন সূরাটি শেষ পর্যন্ত পাঠ করলাম। 

আবার তিনি বল্লেন: হে উকবা বল:

আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি বলব? 

তিনি বলেন: তুমি সূরা “কুল আউযু বিরাব্বিন নাস” পাঠ করো । 

আমি যখন সূরা শেষ পর্যন্ত পড়লাম, 

তখন রাসূলুল্লাহ বল্লেন: এ সূরাদ্বয় দ্বারা যে পরিমাণ প্রার্থনা ও আশ্রয় চাওয়া হয়েছে, অন্য কোন কিছু দ্বারা তা হয়নি।


সুনানে নাসায়ী, নিরাপদ লাভের উপায় অধ্যায়, ৮/২৫৩-২৫৪। এ হাদীস সম্পর্কে শায়খ আলবানী বলেন: হাসান সহীহ, (সহীহ সুনানে নাসায়ী ৩/১১০৭।)


সূরা এখলাসের উপকারিতা:

সূরা কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্যঃ

আবু দারদা রাদিআল্লা নবী হতে বর্ণনা করেন, তিনি তার বর্ণনায় বলেন: তোমাদের কেউ প্রত্যেক রাতে কি কুরআনের এক তৃতীয়াং পাঠ করতে অপারগ ?

সাহাবারা উত্তর দিলেন: প্রতি রাতে এক তৃতীয়াংশ কিভাবে পড়বে?

তিনি বলেন: সূরা “কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ” পাঠ করলে সম্পূর্ণ কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য ।


সহীহ মুসলিম, মুসাফির ও কসর মাযের বিধান অধ্যায়, সূরা ইখলাস পাঠের ফযিলত পরিচ্ছেদ, হাদীস নং ২৫৯-(৮১১), ১/৫৫৬। ইমাম বুখারী আবু সাইদ খুদরী রাদিআল্লা হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। 


(দেখুন: সহীহ বুখারী, কুরআনে ফজিলত পরিচ্ছেদ, হাদীস নং ৯/৫৯।)

যে ব্যক্তি এ সূরাটি পাঠ করতে ভালবাসে আল্লাহ তায়ালা তাকে ভালবাসেন:

আয়েশা রাদিআল্লা হতে বর্ণিত, তিনি তার বর্ণনায় বলেন:


নবী ছালল্লাহু আলাহে ওয়াসাল্লাম।এক ব্যক্তিকে কোন এক অভিযানের দলপতি করে প্রেরণ করেন।

সে দলপতি ইমামতি করার সময় কেরাত শেষে সূরা “কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ” পাঠ করতেন। তারা ফিরে এসে সে সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ(সাঃ)কে অবহিত করলো। তিনি বল্লেন: তোমরা তাকে জিজ্ঞাসা করো, কেন এমন করেছে? তারা তাকে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে, তিনি ত্তর দেন যে, সূরাটি আল্লাহ তায়ালার গুণাগুণ বর্ণিত হয়েছে বিধায় আমি তা পড়তে পছন্দ করি ।


অতপর নবী (সাঃ)বল্লেন: তোমরা তাকে সুসংবাদ দাও যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালাও তাকে ভালবাসেন।


বুখারী ও মুসলিম, তাওহীদ অধ্যায়, নবী দিকে আহ্বান সম্পর্কিত পরিচ্ছেদ, হাদীস নং ৭৩৭৫, ১৩/৩৪৭-৩৪৮; আর হাদীসের মূল শব্দ তার। সহীহ মুসলিম, মুসাফির ও কসর নামাযে বিধান অধ্যায়, সূরা ইখলাস পাঠের ফযিলত পরিচ্ছেদ, হাদীস নং ২৬৩-(৮১৩), ১/৫৫৭।


এই সূরাকে ভালাবাসা জান্নাতে প্রবেশ করার কারণ:

আনাস রাদিআল্লা হতে বর্ণিত, তিনি তার বর্ণনায় বলেন: 

জনৈক ব্যক্তি বলল: আল্লাহর শপথ করে বলছি যে, আমি এই “কুলহুওয়াল্লাহু আহাদ” সূরাকে ভালবাসি। 


অতঃপর রাসূলুল্লাহ বল্লেন: এ সূরার ভালবাসাই তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।

মুসনাদে দারেমী, সুনানে দারেমী নামে প্রসিদ্ধ । কুরআনের ফযিলত অধ্যায়, সূরা ইখলাসের ফযিলত পরিচ্ছেদ, হাদীস নং ৩৪৭৮, ৪/২১৬২। শায়খ হোসেন সেলিম হাদীসটিকে হাসান বলেছেন । (দেখুন: দারেমীর টীকা ৪/২১৬২)


আমাদের এই ইউটুব চ্যেনেলে কুরআন সুন্নাত হাদীস,দৌনন্দিন জিকিরের ফজিলত বিষয়ে জানার জন্য চ্যনেলে {হে মুমিনগণ!}দেখুন।
সুনানে ইবনে মাজহা সহি হাদিস শুনুর জন্য ইউটুব চ্যনেস {হাদিস বিশ্বনবির বাণী}দেখুন।
সুনানে ইবনে মাজহা সবগো সহিহ হাদিস দেখুন।
আল-কোরআন ১১৪টি সুরা শুনার জন্য ইউটুব চ্যেনেল {ইসলামিক একাডেমি এনপি}দেখুন।


Post a Comment

0 Comments