Ticker

10/recent/ticker-posts/

দৈনন্দিন দোওয়া ও জিকিরের ফযীলত

দৈনন্দিন দোওয়া ও জিকিরের ফযীলত

দৈনন্দিন দোওয়া ও জিকিরের ফযীলত


কুরআন ও হাদীসে জিকিরের অনেক ফযলিত বর্ণিত হয়েছে । নিম্নের শিরোনামগুলিতে কতিপয় উল্লেখ করা হলো: 


১। আল্লাহর জিকিরই সর্ব শ্রেষ্ঠ: এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়াল বলেন:

অর্থাৎ নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালার জিকিরই সর্বশ্রেষ্ট। (সূর আনকাবূত:৪৫)


২। জিকির হলো সর্বোত্তম আমল


৩। জিকির হলো পূত-পবিত্র আমল


৪। জিকির হলো সর্বোচ্চ আমল


৫। জিকির হলো স্বর্ণ-রৌপ্য দান করার চেয়েও উত্তম


৬। জিকির হলো শত্রুর মুকাবেলা করে শত্রুকে হত্যা কর অথবা শহীদ হয়ে যাওয়া হতে উত্তম


৭। জিকির জাহান্নামের আযাব হতে মুক্তির সর্বোত্তম উপায়ঃ


ইমাম তিরমিযী ও ইমাম ইবনে মাজাহ আবু দারদা (রাদিআল্লা) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেন: “আমি কি তোমাদের উত্তম আমলের কথা জানাবো না, যা তোমাদের প্রভূর নিকট অত্যন্ত পবিত্র, তোমাদের জন্য অধিক মর্যাদা বৃদ্ধিকারী, (আল্লাহর পথে) সোনা-রূপা ব্যয় করা অপেক্ষা উত্তম এবং তোমরা তোমাদের শত্রুদের মুখোমুখি হয়ে তাদেরকে হত্যা করবে এবং তারা তোমাদেরকে হত্যা করার চাইতেও অধিকতর শ্রেয়?


তাঁরা বললেন, হ্যাঁ; বলুন, তিনি বলেন, আল্লাহর জিকির।”


মুয়াজ বলেন: আল্লাহর আযাব থেকে মুক্তকারী তাঁর জিকিরের চেয়ে উত্তম কিছু নেই।


(জামে তিরমিজী, রাসূল এর দাওয়াত অধ্যায়, হাদীস নং ৩৬০১. ৯/২২৪; এবং সুনানে ইবনে মাজাহ, শিষ্টাচার অধ্যায়, জিকিরের ফযিলত পরিচ্ছেদ, হাদীস নং ৩৮৩৫; ২/৩৩১, শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।


(দেখুন: সহীহ সুনানে তিরমিজী ৩/১৩৯; ও সহীহ সুনানে ইবনে মাজাহ ২/৩১৬)।


৮। আল্লাহ তায়ালা তাঁর জিকিরকারীর সাথে থাকেন:


৯। যে ব্যক্তি আল্লাহর জিকির করে থাকে, তিনি তাকে স্মরণ করে থাকেন।


(ক) ইমাম বুখারী ও মুসলিম আবু হুরাইরা(রাদিআল্লা) হতে বর্ণনা করেন, তিনি তার বর্ণনায় বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: 


“আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন: আমি আমার বান্দার আমার সম্বন্ধে ধারণা অনুযায়ী,- সে, যখন আমার জিকির করে, আমি তখন তার সাথে, সে যখন আমাকে তার অন্তরে স্মরণ করে আমিও তাকে আমার অন্তরে স্মরণ করি। 


সে যখন কোন সম্মানিত মহলে আমার বর্ণনা করে, আমি তাদের চেয়ে উচ্চ সম্মানি মহলে তার বর্ণনা করে থাকি 

( বুখারী ও মুসলিম । সহীহ বুখারী, তাওহীদ অধ্যায়, আল্লাহ তায়ালার বাণী )


(খ) আল্লাহ তায়ালা বলেন:

অর্থাৎ তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব। (সূরা বাকারাহ: ১৫২)


১০ । জিকিরে প্রশান্তি লাভ হয়:

এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন:

ألا بذكرِ الله تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ ) (سورة الرعد : ۲۸)

অর্থাৎ জেনে রেখো, আল্লাহর জিকিরের দ্বারাই হৃদয় শান্তি পায়

(সূরা: রা'দ:২৮)


১১ । জিকিরের বৈঠক হলো জান্নাতের বাগানঃ


ইমাম তিরমিজী আনাস বিন মালেক (রাদিআল্লা) হতে বর্ণনা করেন,

তিনি রাসূল্লাহু (সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “তোমরা যখন কোন জান্নাতের বাগানের পার্শ্ব দিয়ে অতিবাহিত হতে থাক, তখন সেখান থেকে ফায়দা নাও বা তাতে যোগদান করো। সাহাবারা জিজ্ঞাসা করল: “জান্নাতের বাগান কি?


অর্থাৎ: “আল্লাহ তায়ালা তার সম্পর্কে তোমাদেরকে সতর্ক করছেন।” পরিচ্ছেদ, ৪০৫নং হাদীসে অংশ ১৩/৩৮৪; এবং সহীহ মুসলিম, জিকির দোয়া, তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা অধ্যায়, আল্লাহর জিকির করার দিকে উৎসাহ প্রদান পরিচ্ছেদ, ২- (২৬৭৫) নং হাদীসের অংশ বিশেষ, ৪/২০৬১; হাদীসের শব্দগুলি মুসলিমের।


তিনি বলেন: জিকিরের বৈঠক”।

( জামে তিরমিজী, রাসূল্লহু (সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) হতে দোয়াসমূহের অধ্যায়, হাদীস নং ৩৭৪১, ৯/৩৪৫। ইমাম তিরমিজী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন, এবং শায়খ আলবানীও হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। 


(দেখুন: পূর্বের টিকা ৯/৩৪৫; এবং সহীহ সুনানে তিরমিজী ৩/১৬৯; এবং সহীহ হাদীস সিরিজ ৬/১৩০-১৩৪)।


১২। ফেরেস্তারা জিকিরের বৈঠককে বেষ্টন করে রাখে: 


১৩। জিকিরের বৈঠক আল্লাহর রহমতে আচ্ছন্ন হয়


১৪। জিকিরের বৈঠকে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রশান্তি অবতীর্ণ হতে থাকে:


ইমাম মুসলিম আবু হুরাইরা ও আবু সাঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণনা করেন, তারা নবী হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: কোন সম্প্রদায় যখন আল্লাহর জিকির করার জন্য বসে তখন ফেরেস্তারা তাদেরকে বেষ্টন করেন, আল্লাহর রহমত তাদেরকে ছেয়ে নেয়, তাদের উপর প্রশান্তির ধারা বর্ষণ হয়, আল্লাহ তার নিকটবর্তী ফেরেস্তাদের নিকট তাদের কথা আলোচনা করেন।” 


( সহীহ মুসলিম, দোয়া, তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা অধ্যায়, কুরআন তেলাওয়াত ও জিকিরের জন্য একত্রিত হওয়ার ফযিলত পরিচ্ছেদ, হাদীস নং ২৯- (৪/২০৭৪)।


১৫। আল্লাহ তায়ালার জিকিরকারী যেন প্রাণ বিশিষ্ট:


ইমাম বুখারী আবু মুসা(রাদিআল্লা) হতে বর্ণনা করেন, তিনি নবী (সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “যারা তাঁর প্রতিপালকের জিকির করে আর যারা করে না তারা হলো জীবিত ও মৃতের মত।” 

( সহীহ বুখারী, দাওয়াত অধ্যায়, আল্লাহ তায়ালার জিকিরের ফযিলত পরিচ্ছেদ, হাদীস নং ৬৪০৭, ১১/২০৮ )।


১৬। বেশী বেশী আল্লাহর জিকিরকারীদের জন্য রয়েছে পরিত্রাণ:

আল্লাহ তায়ালা বলেন:


অর্থাৎ তোমরা বেশী বেশী আল্লাহর জিকির করো, যাতে করে পরিত্রাণ পেতে পারো । (সূরা জুমআ : ১০)


১৭। যাদের জন্য ক্ষমা ও মহা প্রতিদান রয়েছে তাদের বৈশিষ্ট্য হলো বেশী-বেশী জিকির করা:


আল্লাহ তায়ালা বলেন:


* إنّ الْمُسْلِمينَ وَالْمُسْلِمَاتِ وَالْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَالْقَانتينَ وَالْقَانِتَاتِ وَالصَّادِقِينَ وَالصَّادِقَاتِ وَالصَّابِرِينَ وَالصَّابرَاتِ الْخَاشِعِينَ وَالْخَاشِعَاتِ والْمُتَصَدِّقِينَ وَالْمُتَصَدَّقَاتِ وَالصَّالِمينَ وَالصَّائمات والحافظينَ فُرُوجَهُمْ وَالْحَافِظَات والذاكرينَ اللَّهَ كَثِيرًا وَالذاكرَات أَعَدَّ اللهُ لَهُم مَّغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا ) (سورة الأحزاب : ٣٥)


অর্থাৎ নিশ্চয়ই মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারী, মু'মিন পুরুষ ও মুমিন নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ ও বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, রোযা পালনকারী পুরুষ ও রোযা পালনকারী নারী, লজ্জাস্থান হিফাযতকারী পুরুষ ও লজ্জাস্থান হিফাযতকারী নারী, আল্লাহর অধিক জিকিরকারী পুরুষ ও অধিক জিকিরকারী নারী, তাদের জন্য আল্লাহ রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান । (সূরা আহযাব: ৩৫)


১৮। বেশী বেশী আল্লাহ তায়ালার জিকিরকারী অগ্রগামীদের অন্তর্ভুক্ত:

ইমাম মুসলিম আবু হুরাইরা(রাদিআল্লা) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মক্কার রাস্তায় চলছিলেন, এমতাবস্থায় তিনি জুমদান নামক পাহাড়ের পার্শ্ব দিয়ে চলাবস্থায় বল্লেন এটি জুমদান পাহাড়, মুফারিদগণ অগ্রগামী হয়ে গেছে। সাহাবারা জিজ্ঞাসা করলেন: মুফারিদ কারা?


তিনি বলেন: আল্লাহর বেশী বেশী জিকিরকারী পুরুষ ও মহিলাগণ।


(মুসলিম) ( সহীহ মুসলিম, জিকির, দোয়া, তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা অধ্যায়, আল্লাহ তায়ালার জিকির করার প্রতি উৎসাহ প্রদান অধ্যায়, হাদীস নং ৪- (২৬৭৬), ৪/ ২০৬২)।


১৯। জিকিরকারীদের নিয়ে আল্লাহ তায়ালা গর্ব করে থাকেন:

 

মুয়াবিয়া (রাদিআল্লা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন একদা রাসূলুল্লাহ সাহাবাদের এক বৈঠকের নিকট এসে বল্লেন: তোমরা এখানে কো বসেছ? তারা বলল:

আল্লাহ তায়ালা যে আমাদের উপর অনুগ্রহ করে ইসলামের জন্য হিদায়েত করেছেন সে জন্য আমরা বসে আল্লাহ তায়ালার জিকির করছি ও তাঁর প্রশংসা করছি।


তিনি বলেন: আল্লাহর শপথ! তোমারা কি এ উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোন কাজে বসনি?


তারা বলল: আল্লাহর শপথ! আমরা একাজের জন্যই বসেছি। 


তিনি বলেন: আমি তোমাদেরকে মিথ্যাবাদী মনে করে শপথ করতে বলিনি, বরং এমাত্র জিব্রাঈল এসে সংবাদ দিলেন যে, তোমাদের নিয়ে আল্লাহ তায়ালা ফেরেস্তাদের নিকট গর্ব করছেন।

(মুসলিম) ( দেখুন উপরোক্ত টীকা, জিকির, দোয়া, তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা অধ্যায়, কুরআন তেলাওয়া ও জিকিরের নিমিত্তে একত্রিত হওয়ার ফযিলত পরিচ্ছেদ ৪০-(২৭০১) নং হাদীসের অংশ বিশেষ, ৪/২০৭৫)।


২০। শয়তান থেকে নিরাপদে থাকার জন্য আল্লাহর জিকিরই বান্দার জন্য একমাত্র সম্বল:


হারেস আল-আশআরী ( রাদিআল্লা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন; নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা ইয়াহইয়া বিন জাকারিয়া (আলাইহিমাস সালাম)কে পাঁচটি কালেমা আমল। 


করার নির্দেশ দেন, অনুরূপ বানী ইস্রাঈলকে সেগুলি আমল করার নির্দেশ দেন।


অত:পর জনগণ বায়তুল মাকদেসে একত্র হলো, এমনকি মসজিদ ভরে গেল, এমনকি মুসজিদের উচু স্থানেও লোক বসল৷ 

অতঃপর তিনি বল্লেন: নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা আমাকে আদেশ করেছেন যে, আমি যেন পাঁচটি কালেমার উপর আমল করি এবং তিনি তোমাদেরকেও নির্দেশ দেন, যেন তোমরাও তার উপর আমল কর।


প্রথম: তোমরা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার এবাদত করবে আর তাঁর সাথে কাউকে অংশীদার স্থাপন করবে না।


দ্বিতীয়ঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে নামাযের নির্দেশ দিয়েছেন।


তৃতীয়: আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে রোযার নির্দেশ দিয়েছেন ।


চতুর্থ: আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে দান-খয়রাত করার নির্দেশ দিয়েছেন।


পঞ্চম: তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা আল্লাহ তায়ালার জিকির করবে। কেননা এর দৃষ্টান্ত হলো: এক ব্যক্তিকে যেন দ্রুতগতিতে শত্রু অনুসরণ করছে, 


অত:পর সে ব্যক্তি শক্ত দুর্ভেদ্য এক দুর্গে প্রবেশ করে নিজকে রক্ষা করল, অনুরূপভাবে কোন বান্দা আল্লাহর জিকির ব্যতীত শয়তান থেকে নিজকে রক্ষা করতে পারে না।


(আহমাদ ও তিরমিজী) (মুসনাদ ৪/১৩০ (মাকতাবা ইসলামী কর্তৃক মুদ্রিত); এবং দেখুন: জামে তিরমিজী, আমছাল অধ্যায়, নামায, রোযা ও সাদকার দৃষ্টান্ত পরিচ্ছেদ, ৩০২৩ ৮/১৩০-১৩১ হাদীসের অংশ বিশেষ; আর হাদীসে শব্দগুলি তিরমিজীর। ইবনে কাইয়্যুম ও আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।


(দেখুন: এলামুল মুআক্কিয়ীন ১/২৩১; ও সহীহ সুনানে তিরমিজী ২/৩৭৯।)


২১। হতভাগ্যরাও জিকিরকারীদের সাথে বসে উপকৃত হয়ে থাকে:

আবু হুরাইরা (রাদিআল্লা) হতে বর্ণিত, তিনি তার বর্ণনায় বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাহু আল্লাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেছেন: নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালার কতিপয় ফেরেস্তা রয়েছে, যারা রাস্তা রাস্তা ঘুরে জিকিরকারীদের খুজে। 


যখনই তারা কোন দলকে জিকির করা অবস্থায় পায়, তখনই একে অপরকে আহ্বান করে বলে থাকে, এসো তোমাদের প্রয়োজনীয় বস্তুু পেয়েছ।


রাসূলুল্লাহ বলেন: অত:পর তারা তাদের পাখা দ্বারা দুনিয়ার আকাশ পর্যন্ত তাদেরকে ঘিরে ফেলে ।


রাসূলুল্লাহ (সাল্লাহু আল্লাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: আল্লাহ তায়ালা জানার পরেও তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন: আমার বান্দারা কি বলছে?


রাসূলূল্লাহ(সাল্লাহু আল্লাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: ফেরেস্তারা উত্তর দেয়: তারা আপনার তাসবীহ, তাকবীর ও তাহমীদ পাঠ ও আপনার মহত্ব বর্ণনা করছে।


তিনি বলেন: অত:পর আল্লাহ তায়ালা জিজ্ঞেস করেন: তারা কি আমাকে দেখেছে?


রাসূল (সাল্লাহু আল্লাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: ফেরেস্তারা উত্তর দেয়, না। আল্লাহর শপথ! তারা আপনাকে কখনো দেখেনি।


তিনি বলেন: আল্লাহ তায়ালা জিজ্ঞেস করেন: যদি তারা আমাকে দেখত, তবে তাদের কি অবস্থা হত?


তিনি বলেন: ফেরেস্তারা উত্তর দেয়: তারা যদি আপনাকে দেখত, তবে তারা আরো বেশী এবাদত করত, আরো বেশী আপনার মহত্ব বর্ণনা করত, আরো বেশী আপনার তাসবীহ পাঠ করত।


তিনি বলেন: আল্লাহ তায়ালা জিজ্ঞেস করেন: তারা আমার নিকট কি প্রার্থনা করছে?


তিনি বলেন: ফেরেস্তারা উত্তর দেয়: তারা আপনার নিকট জান্নাত প্রার্থনা করছে।


তিনি বলেন: আল্লাহ তায়ালা জিজ্ঞেস করেন: তারা কি জান্নাত দেখেছে?


তিনি বলেন: ফেরেস্তারা উত্তর দেয়, না। আল্লাহর শপথ! হে আমাদের প্রতিপালক! তারা কখনো দেখেনি।


তিনি বলেন: আল্লাহ তায়ালা জিজ্ঞেস করেন: তারা যদি তা দেখত, তবে তাদের কি অবস্থা হত?


তিনি বলেন: ফেরেস্তারা উত্তর দেয়: তারা যদি তা দেখত, তবে তার দিকে তাদের আগ্রহ আরো বেশী হত, আরো বেশী বেশী তা প্রার্থনা করত, এবং তার দিকে আরো বেশী উৎসাহী হয়ে পড়ত।


আল্লাহ তায়ালা বলেন: তারা কোন বস্তু হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছে?


রাসুল (সাল্লাহু আল্লাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: ফেরেস্তারা উত্তর দেয়, জাহান্নাম থেকে ।


তিনি বলেন: আল্লাহ তায়ালা জিজ্ঞেস করেন: তারা কি তা দেখেছে? 

তিনি বলেন: অত:পর ফেরেস্তারা উত্তর দেয়, না ।


আল্লাহর শপথ! হে আমাদের প্রতিপালক! তারা কখনো দেখেনি।


তিনি বলেন: আল্লাহ তায়ালা জিজ্ঞেস করেন: তারা যদি দেখত, তবে তাদের কি অবস্থা হত?


তিনি বলেন: ফেরেস্তারা উত্তর দেয়, যদি তারা দেখত, তবে তা থেকে আরো বেশী বাঁচার চেষ্টা করত, ও আরো বেশী ভয় করত।


তিনি বলেন: আল্লাহ তায়ালা বলেন: আমি তোমাদেরকে সাক্ষী রেখে বলছি, আমি তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছি।


তিনি বলেন: ফেরেস্তাদের একজন বলে উঠল: তাদের মধ্যে অমুক ব্যক্তি তো জিকিরকারীদের অন্তর্ভুক্ত না, সে তো কোন একটা প্রয়োজনে এসেছিল।


মুসলিম শরীফের অন্য বর্ণনায় এসেছে: তিনি বলেন: 


তারা বলবে: হে আমাদের প্রতিপালক! তাদের মাঝে অমুক ব্যক্তি তো অপরাধী, সে তো জিকির করতে আসেনি, বরং সে সেখান দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছিল, অত:পর সে তাদের দেখে বসে পড়েছে। 


তিনি বলেন: আল্লাহ তায়ালা বলবেন: আমি তাকেও ক্ষমা করে দিলাম, তারা এমন লোক যাদের সাথে বসলে সঙ্গিরা হতভাগা থাকে না। 


(সহীহ মুসলিম, জিকির, দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা অধ্যায়, জিকিরের মজলিশের ফযিলত, ২৫- (২৬৮৯), ৪/২০৭০ নং হাদীসের অংশ বিশেষ)।


তিনি বলেন: তারা হলো, এমন সঙ্গি যাদের সঙ্গে অন্য সঙ্গি বসলে হতভাগা হবে না।


(বুখারী ও মুসলিম। সহীহ বুখারী, দাওয়াত অধ্যায়, জিকিরের ফযিলত পরিচ্ছেদ হাদীস নং ৬৪০৮, ১১/২০৮-২০৯; হাদীসের শব্দগুলি বুখারীর। সহীহ মুসলিম, জিকির, দোয়া ও ক্ষমা অধ্যায়, হাদীস নং ২৫-(২৬৮৯), ৪/২০৬৯- ২০৭০)


হে আল্লাহ! তোমার দয়ায় আমাদেরকে জিকিরকারীদের অন্তর্ভুক্ত কর।

আমীন, ইয়া যাল জালালে ওয়াল ইকরাম ।



আমাদের এই ইউটুব চ্যেনেলে কুরআন সুন্নাত হাদীস,দৌনন্দিন জিকিরের ফজিলত বিষয়ে জানার জন্য চ্যনেলে {হে মুমিনগণ!}দেখুন।
সুনানে ইবনে মাজহা সহি হাদিস শুনুর জন্য ইউটুব চ্যনেস {হাদিস বিশ্বনবির বাণী}দেখুন।
সুনানে ইবনে মাজহা সবগো সহিহ হাদিস দেখুন।
আল-কোরআন ১১৪টি সুরা শুনার জন্য ইউটুব চ্যেনেল {ইসলামিক একাডেমি এনপি}দেখুন।


Post a Comment

0 Comments